শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

ঘোড়াঘাটের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ভাল নেই

ঘোড়াঘাটের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ভাল নেই
মনোয়ার বাবু,ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
৪র্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেন্টার কর্মসূচির আওতায় ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক অপারেশন প্লান (ওপি) এর অর্থায়নে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুনঃনির্মান করার সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আর এজন্য তৎকালীন জেলার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর গত বছরের ১৮ মে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনও করেন। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন ভবন তৈরীর সিন্ধান্ত শুধু কাগজ কলমেই থেকে গেছে। এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থায়ই গ্রহণ করা হয়নি।
এদিকে পৌর এলাকার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বয়সের ভাড়ে ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে কেন্দ্রটি পুনঃনির্মান না করায় সেখানেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা প্রদান কার্যক্রম। এভাবেই সেবা নিয়ে চলছে হাজার হাজার মানুষ।
অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সদরএলাকা থেকে চার কিলোমিটার দূরে নির্মিত হওয়ায় আশির দশকে দুই রুমের একটি আবাসিক ও তিন রুম বিশিষ্ট টিনসেটের এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নির্মিত হয়। পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের মাঝা মাঝিতে সরকারি অর্থায়নে, সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত তহবিল এবং পৌরসভার আর্থিক সহযোগিতায় ফাঁটল ধরা দেওয়ালের অংশে সিমেন্ট দিয়ে মেরামত,ভাংগা-চুড়া দরজা জানালা জোড়াতালি দিয়ে কোন রকম টিকিয়ে রাখা, নতুন করে রং করা,সীমানা প্রাচীর দেওয়া এবং কিছু অংশে নতুন টিন দিয়ে এই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি কোন রকম টিকিয়ে রাখা হয়েছে। বর্তমানে এটি ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশাপাশি আবাসিক রুমের অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। ঝড়ে প্রকাণ্ড এক গাছ এই আবাসিক রুমের উপর পড়ে আছে। রুমের উপরের টিন নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যবহারের অনুপোযোগী হওয়ায় অনেক আগেই আবাসিক রুম গুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে এটি পোকামাকড়ের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা পলাশ রেজা বলেন, আমরা এলাকাবাসী জরুরি চিকিৎসা সেবা এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে পেয়ে থাকি। বর্তমানে বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ  হওয়ায় এটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের কথা শুনেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ১৪-১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ এই কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষকে সব সময় ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। সরকারের কাছে দাবি এই অঞ্চল সহ আশেপাশের খেটে-খাওয়া মানুষদের চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ ও কেন্দ্রটিকে আধুনিকায়ন করা।
সেবা নিতে আসা সেফালী মহন্ত জানান, এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসতে ভয় হয়। কখন না জানি মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ে। কিন্তু উপায় নেই আমরা গরীব মানুষ সেবা নিতে হলে এখানেই আসতে হয়।
উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মশিষ্টা দেবাশীষ ভৌমিক বলেন, সপ্তাহের রবি এবং বৃহস্পতিবার দুই দিন এখানে এম.বি.বিএস ডাক্তার আসেন। এই দুই দিন ছাড়াও অন্যান্য দিনে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে।
পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন জানান, বর্তমানে এটি এখন নিজেই রোগীতে পরিণত হয়েছে। এই উপ -স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ জেলার ৬টি কেন্দ্র তিন তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণের সিন্ধান্ত পাশ হয়। অন্যান্য উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ে এটির অবস্থায় অবস্থা অত্যান্ত নাজুক এবং সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বেশী হওয়ায় প্রথমে এটা নির্মাণের কথা ছিল।  আর এজন্য গত বছরের ২৭ এপ্রিল এইচইডি, প্রধান কার্যালয় ঢাকা থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাহাবুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সাত দিনের মধ্যে সাইট প্লান তৈরীসহ বিদ্যমান জায়গায় সকল কিছু অপসরণ করতে বলা হয়। সাইট প্লান তৈরী করা হলেও বিদ্যমান কোন কিছুই আর অপসরণ হয়নি। তাই এখনোও জরাজীর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল আনোয়ার জানান, ঘোড়াঘাট উপজেলার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি পুনঃনির্মানের জন্য নির্মাণ স্থলের নকশা ও জরাজীর্ণ ভবণ অপসারণের জন্য গত বছরের ২৯ মে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিনাজপুর বরাবর চিঠি প্রদান করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন নির্দেশনা না আশায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জেলার সহঃকারি প্রকৌশলী স্বাস্থ্য মুসজাহিদ জানান, একই সাথে জেলার ছয়টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুনঃনির্মাণের আবেদন চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।  আমাদের কাছে এপর্যন্ত কোন নির্দেশনা আসেনি। আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন