শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

গাইবান্ধায় কালো মেঘ চাষে কৃষকের  মুখে ফুটেছে হাসি

গাইবান্ধায় কালো মেঘ চাষে কৃষকের  মুখে ফুটেছে হাসি
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধার বিভিন্ন  অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কালোমেঘ চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। লাভজনক হওয়ায়  অনেক কৃষক কালো মেঘ চাষ করছে।
ইউনানি আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল হিসেবেও এখন গাইবান্ধায় কালোমোঘ ব্যবহার হচ্ছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, কালোমেঘ জ্বর থেকে শুরু করে অজীন, যকৃতের গোলযোগসহ অনেক জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। কালোমেঘের বৈজ্ঞানিক নাম এন্ড্রোগ্রাফিস প্যানিকুলাটা। কালোমেঘ গাছ আধামিটার থেকে এক মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। কান্ড শাখা-প্রশাখা চারকোণাকৃতি, নরম ও সবুজ। মরিচ পাতার সদৃশ কালোমেঘ পাতার অগ্রভাগ ও বোঁটার দিকে ক্রমশ সরু এবং বর্ণ গাঢ় সবুজ।
 বাংলাদেশের সর্বত্র কালোমেঘ জন্মে। কালোমেঘের পাকা বীজের রং হালকা খয়েরি। বর্ষার পর থেকে শীতকাল পর্যন্ত ফুল ও ফল হয়।
 সাধারণত জুন-জুলাই মাস চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। তবে পরিপক্ব বীজ মাটিতে পড়ে আপনা আপনি কালোমেঘ গাছ জন্মে। তুলনামূলকভাবে এটি ছায়াযুক্ত জায়গাতে বেশি জন্মায় বলে অন্য গাছের নিচে এবং সাথী ফসল হিসেবেও এর চাষ করা যায়। সামান্য মাটি খুঁড়ে বীজ বপন করলে ফলন বাড়ে। কালোমেঘ অঞ্চলভেদে কল্পনাথ হিসেবেও পরিচিত। অনেকে অত্যধিক তেতো স্বাদের এ গাছ শুকিয়ে চিরতা বলে বিক্রি করে থাকে।
গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জ  উপজেলার  বিভিন্ন এলাকায় কালোমেঘের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে।
 জানা যায়, এই এলাকায় কালোমেঘ চাষের অগ্রপথিক কুঞ্জমহিপুর গ্রামের ক্ষুদ্র ভেষজ ব্যবসায়ী দিনেশ ।তিনি ১২ বছর থেকে কালো মেঘ ও তুলসী চাষ করছেন।
তিনি জানান বীজ রোপনের পর থেকে ৬ মাসের মধ্যে পরিপক্ক হয়।
 কালো মেঘ ফসলে তেমন কোন রোগ বালাইও হয় না। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টিতে কোন সমস্যা হয় না। সাথী ফসল হিসেবে কোন রকম খরচ ছাড়াই প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ২০ মণ কালোমেঘ উৎপাদন করা হয়।
যার বজারমূল্য মণপ্রতি চার হাজার টাকা। ভরা মওসুমে এ মূল্য দাঁড়ায় ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা মণ।
কৃষকরা জানান, সাধারণত বৈশাখ মাসে এ বীজ বপন করা হয়। পরিপক্ব হয় কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে।এই ফসলে কোন রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না।
বিক্রি করতে কোন অসুবিধা হয় না দেশের স্বনামধন্য ঔষধ কোম্পানি স্কয়ার, একমির প্রতিনিধিরা যোগাযোগ করে সরাসরি জমি থেকে নগদ মুল্যে এই ফসল নিয়ে যায়।
সাদুল্লাপুর উপজেলার ঈদিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বলেন স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় কৃষকরা এই কালোমেঘ চাষের উপর ঝুকে পরেছেন।
সাদুল্লাপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক   কালোমেঘ বা চিরতার মধ্যে বহু মূল্যবান ক্যাফেইন রয়েছে। প্যারাসিটামলসহ অর্ধশতাধিক এলোপ্যাথিক, হোমিওপ্যাথিক ও হারবাল ওষুধ তৈরিতে ক্যাফেইন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন