শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের খেদমতে কাজ করে : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের খেদমতে কাজ করে : প্রধানমন্ত্রী

মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক :আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের খেদমত ও উন্নয়নে কাজ করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা-২০২৩-এর জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ী হাফেজগণের মধ্যে পুরস্কার বিতরণকালে আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের সকলকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি যাতে আমাদের সন্তানরা বিপথে যেতে না পারে।’

 

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

 

প্রধানমন্ত্রী আলেম-ওলামাদেরকে সকলের মাঝে ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী ছড়িয়ে দিতে বলেন, যাতে কেউ কাউকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের পথে বিচ্যুত করতে না পারে  এবং ইসলামের বদনাম করতে না পারে। কেননা ইসলাম পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং সর্বদা শান্তির কথা বলে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসী, তারা সন্ত্রাসী। তারা কোন ধর্ম, দেশ বা জাতি গোষ্ঠীর নয়। তাই সকলের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, আমাদের ধর্মের মান ইজ্জতটা রক্ষা করবেন। কেউ যেন এই বিপথে না যায়। সন্তানের নিয়মিত স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতির বিষয়টা এবং কার সঙ্গে মিশছে সে বিষয়টা আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

তিনি বলেন, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম, সেই ধর্মের সঙ্গে সামান্য মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য কেন সন্ত্রাসী নামটা যুক্ত হবে?  সত্যিকারের যারা ধর্মে বিশ্বাসী তাদের জন্য এটা খুব কষ্টদায়ক। কাজেই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, এই সমস্ত কুসংস্কার, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলের ক্ষেত্রে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনাদের দোয়া চাই এবং আমাদের ছেলে মেয়েরা যেন বিপথে না যায় সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নানা ধর্মের লোক এই বাংলাদেশে আছে এবং যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে এটা আমাদের নবী করীম (সা:) এর শিক্ষা, আমরা সেভাবেই চলবো।  চূড়ান্ত বিচার বা শেষ বিচার করবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। কাজেই কে কোন ধর্মের, কে হিন্দু না মুসলমান না বৌদ্ধ না খ্রিস্টান না কাদিয়ানী তা দেখার দায়িত্ব আমাদের না। যার যার কর্মফল সে সে ভোগ করবে।’

 

বিচারের ভার নিজেদের হাতে তুলে না নিয়ে বরং আরো বেশি সংখ্যক মানুষ যেন ইসলামের ছায়াতলে আসে সেজন্য সকলের প্রচেষ্টা থাকা উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

 

 

তিনি বলেন, ‘আলেম ও ওলামায়ে কেরাম যারা আছেন আপনাদের কাছে আমার এই অনুরোধ ইসলাম ধর্মের মর্ম বাণী প্রচার করে আরো অধিক সংখ্যক মানুষ যেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে পারে সেদিকে সকলের দৃষ্টি দিতে হবে। সন্ত্রাস করে ইসলাম সম্পর্কে বদনাম যেন কেউ না করতে পারে।’

 

তিনি বলেন, এই যে কোমলতি ছেলেদের মাথাগুলো খারাপ করে দিয়ে তাদের বিপথে চালানো, তাদের জীবনটাকে ধ্বংস করা, সুইসাইড অ্যাটাক করে মানুষ মারা- এটাতো ইসলাম ধর্মে মহাপাপ, গোনাহের কাজ। সুইসাইড করলে তো কেউ বেহেশতে যাবে না এটাই তো বলা আছে।

 

কোমলমতি শিশু-কিশোরদের সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ থেকে দূরে রাখতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সুইসাইড (আত্মহত্যা) করে মানুষ হত্যা করে কোন বেহেশতে যাচ্ছে তারা। এই বিপথ থেকে তাদের সরাতে হবে। এটা একটা ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ইসলাম ধর্মের নামে বদনাম দেওয়া হয়। এই বদনামের হাত থেকে ইসলামকে রক্ষা করতে হবে।

 

‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আজ এদেশের মানুষ দু’বেলা পেটভরে ভাত খেতে পারছে’ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন,‘আজকে সকলকে আমরা ঘর তৈরী করে দিচ্ছি, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনা পয়সায় ৩০ প্রকার ওষুধ দিচ্ছি, মানুষকে শিক্ষা এবং কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় তারা দেশে-বিদেশে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে, কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি যাতে ধর্মীয় শিক্ষার সঙ্গে পার্থিব শিক্ষা নিয়ে সকলে নিজেরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে এবং আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ হতে পারে, সে ব্যবস্থাটাই আমরা করে  দিচ্ছি।’

 

অনুষ্ঠানে বিজয়ী ৫ জন হাফেজের হাতে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট, নগদ অর্থের চেক এবং সনদ তুলে দেন।

 

তারা হচ্ছেন- প্রথম হাফেজ আফফান বিন সিরাজ, দ্বিতীয় হাফেজ মো. ওসমান গণি, তৃতীয়  হাফেজ মো. আবু জাফর শাকিল (দৃষ্টি প্রতিবন্ধি), চতুর্থ হাফেজ মো. খালিদ সাইফুল্লাহ এবং পঞ্চম হাফেজ মো. মোতাসিম বিল্লাহ।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু.আ. হামিদ জমাদ্দার, বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক মাওলানা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। যার মধ্যে রয়েছেন আলহাজ্ব সুফী মো. মিজানুর রহমান এবং হযরত মাওলানা সালাউদ্দিন নানোপুরী।

 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বাংলাদেশের দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আবুল কালাম আজাদ।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন